দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের শেডে পড়ে আছে আমদানি করা কেমিকেল। এর আগে ছোট ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেও এবার বৈরুত বিস্ফোরণের পর নড়েচড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনা এড়াতে দেশের সব বন্দর, স্থলবন্দর, বিমানবন্দরের আশপাশে কোনো রকম বিস্ফোরক, তরল দাহ্য পদার্থ ও কেমিকেল মজুদ না করার নির্দেশনা দিয়েছে বিস্ফোরক অধিদপ্তর। এ অবস্থায় কন্টেইনারে দাহ্য বস্তু আনা বন্ধ করতে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
গত ৪ আগষ্ট এক বিস্ফোরণে জ্বলে ওঠে লেবাননের বৈরুত বন্দর। ঠিক তার ২১ দিন আগে ১৫ জুলাই আগুনে পুড়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দরের ৩ নম্বর শেড। অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ইউনিটের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বন্দরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরের পরিস্থিতিও বৈরুতের মতো হতে পারতো।
কারণ বন্দরের পি শেডেও দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে আমদানিকৃত বেশ কিছু কেমিকেল। এ অবস্থায় দুর্ঘটনা এড়াতে শুরু হয়েছে এগুলো সরিয়ে নেয়ার কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, দাহ্য পদার্থগুলো তো থাকবেই না। অন্যান্য কেমিকেলগুলোও সরিয়ে নিতে হবে। এ বিষয়ে আমরা কাস্টমসের সাথে আলাপ করেছি।
দেশের সার কারখানার পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্প কারখানায় কাঁচামাল হিসাবে বিদেশ থেকে আনা হয় অ্যামোনিয়া নাইট্রেট, সোডিয়াম নাইট্রেট, সালফার, পটাশিয়াম ক্লোরেট, ইথানল, মিথানলের মতো উচ্চমাত্রার কেমিকেল। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে ক্ষতিকর এই কাঁচামাল মজুদ বন্ধ করতে নির্দেশনা দিয়েছে বিস্ফোরক অধিদপ্তর।
এ নির্দেশনার পর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এল সি এল কন্টেইনারের মাধ্যমে দাহ্য পদার্থের পাশাপাশি কেমিকেল আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এল সি এল কন্টেইনারের মাধ্যমে দাহ্য পদার্থের পাশাপাশি কেমিকেল আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। নামবে আর বের হয়ে যাবে।
তবে বন্দরের এই সিদ্ধান্তে বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মূলত একাধিক আমদানিকারক একটি কন্টেইনারে করেই কেমিকেল আমদানি করে। এসব রাখা হয় বন্দরের পি শেডে।
বাংলাদেশ ফ্রেইট এন্ড ফরোয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশনের খায়রুল আলম সুজন পরিচালক বলেন, ‘এল সি এল কন্টেইনারের মাধ্যমে দাহ্য পদার্থ আনা বন্ধ করলে তো বাংলাদেশ অচল হয়ে যাবে।’
গত ৬ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে শিল্পকারখানার জন্য প্রায় দু’ হাজার মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া নাইট্রেটসহ অন্যান্য কেমিকেল আমদানি করা হয়েছে।