বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘয়ের পর মাটিরাঙ্গায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন বিজিবি সদস্য। এছাড়া একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর খবর শুনে তাদের পরিবারের এক নারী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে জানান এলাকাবাসী।
মাটিরাঙ্গা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম এবং খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানান, ৩ মার্চ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাটিরাঙ্গার গাজীনগর এলাকায় বিজিবি-গ্রামবাসীর মধ্যে কাটা গাছ স মিলে পাঠানো নিয়ে তর্ক শুরু হয়। এরপরই সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে।
মাটিরাঙ্গায় বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষ
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- বিজিবির পলাশপুর জোনের সিপাহী মো. শাওন, গ্রামবাসী সাহাব মিয়া, তার দুই ছেলে আহমদ আলী ও আলী আকবর এবং একই গ্রামের বাসিন্দা মফিজ মিয়া। এদিকে দুই ছেলে ও স্বামীর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সাহাব মিয়ার স্ত্রী রঞ্জু বেগম হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। সংঘর্ষে আহত হানিফ মিয়াকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যুৎ লাইনের জন্য কাটা পড়া গাছের টুকরা ট্রলিতে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন আহমদ আলী। গাজীনগর এলাকায় বিজিবির পলাশপুর জোনের একটি টহল দল ট্রলি আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ নিয়ে বিজিবি ও গ্রামবাসীর মধ্যে বাকবিতণ্ডতার একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে বিজিবি সদস্য শাওন, সাহাব মিয়া, আহমদ আলী ও আলী আকবর নিহত হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে মফিজ মিয়া মারা যান। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ দুই জনকে আটক করেছে। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।
মাটিরাঙায় সংঘর্ষে নিহত দুই জনের লাশ হাসপাতালে
সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ, বিজিবির গুইমারা রিজিয়নের কমান্ডার মোহাম্মদ শাহরিয়ার জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।
মাটিরাঙ্গা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম জানান, ‘বিজিবি-গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুই জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
মাটিরাঙায় বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষ
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার প্রতিনিধিকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার আগে এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না। নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।’