বিডি বার্তা ডেস্ক: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৪তম প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৭৫ সালের ১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন তিনি।
বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন তিনি।
কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী কবি হিসিবে পরিচিত। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুলের কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে।মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার কবিতা,গান এদেশের মুক্তিকামী মানুষকে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে, উজ্জীবিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করে।
কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে তার লেখনি ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। নজরুলের কবিতা ও গান যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে মানুষকে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক চিরকালীন দ্রোহের প্রতীক কাজী নজরুল ইসলাম।
তার অনন্য সৃষ্টিতে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা সাহিত্য। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে কাজী নজরুল ইসলাম তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেননি। তার রচিত কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির ভান্ডারকে করেছে সমৃদ্ধ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্বপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বসবাসের ব্যবস্থা করেন বঙ্গবন্ধু।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।
এদিকে, জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বাংলা একাডেমি কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সকালে একাডেমির পক্ষ থেকে জাতীয় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।